বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বিএনপিকে টলানোর সাধ্য কারও নেই

মঙ্গলবার, নভেম্বর ১২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক খেলাধুলা চলছে বাংলাদেশে। অনেকে আমাকে বলেন, আবার কি শুরু হয়েছে দেশে? স্বৈরাচার চলে গেছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, আমাদের কি আবার ইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে? আমি বলেছি, চিন্তার কোন কারণ নেই। খেলাধূলা যারা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না। তারা বিএনপির শক্তি বুঝতে পারছে না। এই বিএনপি সেই বিএনপি নই। এই বিএনপি বহু শক্তিশালী অবস্থানে, এর শেকড় বহু গভীরে চলে গেছে। এই বিএনপিকে টলানোর সাধ্য কারও নেই। বিএনপির কয়েকটা সিদ্ধান্ত তো আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন। সুতরাং, এ রকম সিদ্ধান্ত দিলে এ অবস্থায় যেতে হবে।’

সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকালে সিটির ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্সে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভা, পেশাজীবী সমাবেশ ও নয়া নির্বাচিত মেয়র শাহাদাত হোসেনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডাক্তার খুরশীদ জামিল চৌধুরী ও এ্যাব চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি জানে আলম সেলিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেড এম জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রওাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেনকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। তাছাড়া, ৭ নভেম্বর, ১৯৭৫ ও জুলাই বিপ্লব ২০২৪’-এর উপর নির্মিত ডকুমেন্টারি শর্টফিল্ম দেখানো হয়।

অনুষ্ঠানে আমীর খসরু আরো বলেন, ‘বিএনপিকে জোর করে ক্ষমতার বাইরে রাখার তাদের যে ভাবনা ছিল, ওই ওয়ান-ইলেভেনের বিরাজনীতিকরণ, আবার নতুন চিন্তা, নতুন ভাবনা, ক্ষমতার স্বাদ তো কেউ কেউ পেয়েছেন, মনে রাখছেন এ ক্ষমতা ধরে রাখলে মন্দ কী! কিন্তু এ স্বাদ পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পাওয়ার জন্য ১৬ বছর যুদ্ধ করেছে। বিএনপিকে ভাঙার সব ধরনের চেষ্টা হয়েছে। কিছু বাকি নেই, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা সব হয়েছে। খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার চেষ্টার মধ্যেও তিনি টলেননি, তারেক রহমান টলেননি, বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ টলেনি। সকলের অবস্থান শক্ত।’

এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গেল ৫ আগস্ট একটি অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার পালিয়েছে। কিন্তু, তার দোসররা আমাদের মাঝে আছে, সমাজে আছে। এ দোসরদের যদি আমরা চিহ্নিত করতে না পারি, তাহলে সত্যিকার অর্থে যে মূল্যবোধ আবু সাইদ, মুগ্ধ, ইলিয়াছ আলী, চৌধুরী আলম, কোন কিছুই আদায় হবে না। যদি দোসরদের আইনের কাঠগড়ায় না আনতে পারেন। তাদের ক্ষমতার যে দম্ভ অর্থাৎ মানুষের লুণ্ঠণকৃত টাকা, আইন-বেইনী অস্ত্র, সেগুলো যদি উদ্ধার এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে না পারে, তাহলে সব শহীদের রক্ত বৃথা যেতে বাধ্য।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাত্রিতে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় জাতি যখন নেতৃত্বশূন্য দিশেহারা তখনই জিয়াউর রহমান উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত আবির্ভূত হয়েছিলেন। এমনি এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে তিনি পাক বাহীনির বিরুদ্ধে ‘উই রিভোল্ট’ বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিষয় আসলেই জিয়াউর রহমানের নাম আসবে। জিয়াউর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অগ্রনায়ক। কেউ চাইলেই এই ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ, ইতিহাস লিখেন ইতিহাসবিদরা। রাজনীতিবিদরা ইতিহাস রচনা করলে সেটা হয় প্রোপাগান্ডা।’

এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘ছাত্র-জনতার সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মাধ্যমে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এ জন্য গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের পথ আজ প্রশস্ত হয়েছে। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসান পরবর্তী একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেশাজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। হাজারো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে কোনভাবেই নস্যাৎ হতে দেওয়া যাবে না।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি নসরুল কদির, ড্যাব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) শাখার সভাপতি ডাক্তার জসিম উদ্দীন, সিএমইউজের সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক, ড্যাব মহানগর সভাপতি আব্বাস উদ্দীন, চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি এমএ সাফা চৌধুরী, ব্যাংকার মেহরাব হোসেন খান।

সিএন/আলী

Views: 1

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন