সিএন প্রতিবেদন: ব্রুকলিনের একটি মসজিদের সামনে মাস্ক পরিহিত এক ব্যক্তি বুলহর্ন দিয়ে ইসলাম বিরোধী অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করার একটি ভিডিও রেকর্ডিং সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনার পর মসজিদের মুসল্লিদের মাঝে চরম আতংক দেখা দিয়েছে। যদিও স্থানীয় রাজনীতিকরা ও নিউইয়র্ক গভর্নর ক্যাথি হোচুল এই ঘৃণামূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার কেনসিংটনের চার্চ অ্যাভিনিউতে মসজিদ নুর আল-ইসলামের সামনে অপরিচিত ওই ব্যক্তিকে অশালীন ও ইসলাম বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা যায়।
মুসল্লিরা জানান, অজ্ঞাত ওই ব্যাক্তির মুখ স্কি মাস্ক দিয়ে ঢাকা ছিল। তাঁর মাথায় ছিল “মেক অ্যামেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন” লাল বেসবল ক্যাপ। তিনি নিউইয়র্ক জেটসের একটি জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন। তিনি মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে ঘুরে ঘুরে গালিগালাজ ও যৌন অবমাননাকর মন্তব্য করতে থাকেন। এই ঘটনা মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
মসজিদ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, “সে মহিলাদের প্রবেশদ্বারের সামনে গালিগালাজ করছিল। এই ঘটনার কারণে আমরা খুব দুঃখিত।”
এদিকে ঘটনা তদন্তে শুক্রবার নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের একটি গোয়েন্দা দল মসজিদে আসেন। তারা অজ্ঞাত ওই লোককে চিহ্নিত করতে চেষ্টা করছেন। গোয়েন্দা দল সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘চিন্তা করবেন না, আমরা এই সমস্যা সমাধান করব।”
ব্রুকলিনের এই মসজিদে দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের, ইয়েমেন, মিশর, পাকিস্তান এবং ভারতের পরিবারের সদস্যরা নামাজ আদায় করতে আসেন। প্রথমবারের মতো তাদের মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
মসজিদ সেক্রেটারি আহমেদ ইফতেখার (৪৮) বলেন, “আমরা খুব ভয় পাচ্ছি। এমন কিছু আগে কখনও হয়নি। ২০ বছর ধরে এখানে আছি, কিন্তু কখনও এমন কিছু দেখিনি।”
ইউসুফ বলেন, কেনসিংটন একটি বহুধর্মীয় এলাকা। এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে। এখানে একটি ইহুদি স্কুলও রয়েছে। আমাদের কখনও কোনো সমস্যা হয়নি।
এদিকে ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হলে নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিকরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
গভর্নর হোচুল এক্স-এ লিখেছেন, “এটি একটি ঘৃণামূলক এবং অপমানজনক প্রদর্শনী, যা নিউইয়র্কে সহ্য করা হবে না। কেউ তাদের উপাসনার কারণে ভয়ে বাস করতে পারবে না, এবং আমরা রাজ্যের প্রতিটি কোণ থেকে ইসলামোফোবিক ঘৃণা নির্মূল করতে থাকব।”
ব্রুকলিন স্টেট সিনেটর এবং মেয়র প্রার্থী জেলনর মাইরি বলেছেন, “আমি কেনসিংটনে এই সপ্তাহে প্রদর্শিত স্পষ্ট ইসলামোফোবিয়ার তীব্র নিন্দা করছি। মসজিদ নুর আল-ইসলামের সামনে যেসব অশ্লীল বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা একেবারে অগ্রহণযোগ্য। আমাদের প্রতিবেশীরা শান্তিপূর্ণভাবে উপাসনা করার এবং ঘৃণার ঊর্ধ্বে থাকার অধিকারী।”
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র জানান, “পুলিশ ঘটনাটি সম্পর্কে সচেতন এবং তদন্ত করছে। ৬৬ নম্বর পুলিশ প্রিভিঞ্চের কমান্ডিং অফিসার মসজিদে এসে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।”
সিএন/এমটি
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন